বঙ্গবন্ধু ও তাঁর প্রাইমারি বন্ধু

প্রকাশিত: ১:৪৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২০

বঙ্গবন্ধু ও তাঁর প্রাইমারি বন্ধু

-ড. খান মোঃ মনিরুজ্জামান

কেবল উদিত দিবাকরের স্বতন্ত্র উদারতা প্রভাতে,
সরল মনের নির্মোহ বন্ধুর ভালবাসা রেখাপাতে।
নির্ঝন্জাট পরিমল জীবনকালের কিছু মেলামেশা,
প্রস্ফুটিত শতদলে মায়াবিনী হরিণীর মধুর হ্রেষা।
কত যে স্মৃতি, কতনা বিস্মৃতি এই প্রাইমারি স্কূলে,
অমর প্রেমের নির্যাস উঁকি মারে বারেবারে সমুলে।
আমাদের বঙ্গবন্ধু সেতো মৃত্তিকা সুধাজাত ধীমান,
তাঁর বাল্যস্মৃতি বিকচ কুসুম ম্রিয় শিখা অনির্বাণ।
মধুমতি ও বাগিয়াতি নদী পললের উর্ব্বর সন্তান,
বন্ধুত্বের সীমা ছাড়িয়ে আজ সে বিশ্ববন্ধু সুমহান।

এ মহামানবের এক প্রাইমারি বন্ধু ভাবে মনে মনে,
বাল্যবন্ধু বঙ্গবন্ধু মোরে ঠিক রেখেছে মনে যতনে।
গিমাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সম্প্রীতি,
মনে পড়ে তার বাল্যবেলার গত বিস্মৃত স্মৃতিগীতি।
প্রাইমারি স্কূলের মুজিবও ছিল সবার প্রিয় বন্ধুবর,
এখন তো সে মোদের সমগ্র বাংলাদের জাতিস্মর।
এখন তো সে বঙ্গবন্ধু, বিশ্ববন্ধু বিশ্ব মানবের তরে,
আমি তো তাঁর প্রাইমারি বন্ধু তাঁর সব বন্ধুর উপরে।
এমনি ভেবে তার বখে যাওয়া ছেলেকে সাথে নিয়ে,
ধানমন্ডীর বত্রিশ নম্বরের সন্মুখে হাজির হল গিয়ে।

রাষ্টপতি বঙ্গবন্ধুর বাসা, রকমারি লোকলস্করে ভরা,
আগন্তক ভাবে, তারে কি আছে বঙ্গবন্ধুর মনে ধরা?
এ ভাবনায় ছেলেকে নিয়ে আনাগোনা বাসা চত্ত্বরে,
ভাবে কাছের এই আমি আজ যাবনা তো দুরে সরে।
ছেলের চাকুরি নিয়ে কত যে ভাবনা তার হৃদ মাঝে,
বঙ্গবন্ধুর বাসায় ঢুকতে তাই পড়ে গেল বড় লাজে।
সে ঢুকবে কি ঢুকবেনা, পারবে কি পারবেনা ভাবে,
এও ভাবে বাসায় না ঢুকে সে টুঙ্গিপাড়া ফিরে যাবে।
সাঝের বেলা ছাদে পায়চারি করা বঙ্গবন্ধুর স্বভাব।
বঙ্গবন্ধু ভাবে কিভাবে পুরণ হবে বাঙালির অভাব।

পাঁয়চারির ফাঁকে বাসার সন্মুখে নেত্র নিক্ষেপ ফেলে,
মুজিব বুঝে হাঁটে যারা তারা তাঁর বন্ধু ও তার ছেলে।
দারোয়ানকে বল্লেন, ‘তাদের ডেকে ড্রয়িং রুমে বসাও’,
বঙ্গবন্ধুর পানে মানে অমাবস্যা আঁধারে আলো পাও।
প্রাইমারি স্কূলের বন্ধু প্রফুল্ল মনে ড্রইং রুমে বসে রয়,
ভাবে তার বখে যাওয়া ছেলের চাকুরিটা হবে নিশ্চয়।
ক্ষণকাল পরে সিঁড়ি ভেঙ্গে নামি বঙ্গবন্ধু বল্লেন তারে,
বুকে জড়িয়ে ধরনা কেন তারে তুমি ভালোবাস যারে?
আমি ঐ প্রধানমন্ত্রীত্ব চাইনা যে প্রধানমন্ত্রীত্বের কারণে,
আমার বন্ধু আমার বাসায় ঢুকতে সাহস করেনা মনে।

বঙ্গবন্ধু বল্লেন, ‘বন্ধু, আঁখি ভরে দেখি তব বদনখানি’,
প্রধানমন্ত্রীত্ব নয়, আমি মোর বন্ধুকেই বড় বলে জানি।
আনন্দে কেঁদে কেঁদে বঙ্গবন্ধুকে জড়িয়ে ধরে বন্ধু কয়,
স্বর্গ হতে ফেরেশতা নেমে এসেছে ধুলি ধরায় নিশ্চয়।
মানুষকে ভালোবেসেই তো বঙ্গবন্ধু হতে বিশ্ববন্ধু আজ,
হৃদয়ের আসনে বঙ্গবন্ধু আজ মানুষের রাজাধিরাজ।
বঙ্গবন্ধু ও তাঁর এক বাল্যবন্ধুর এমন ভালোবাসাবাসি,
বিশ্ব বিরল ইতিহাসে এমন আর মিলেনা রাশি রাশি।
প্রধানমন্ত্রীত্ব হতে বন্ধুত্বের মুল্য বেশি মাটির ধরাধারে,
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু কেবল তা পারে।

রচনাকালঃ ১৯/০৯/২০২০ খ্রি.
সময়কালঃ ১১.০ এএম।
সরকারি নুরুননাহার মহিলা কলেজ পাড়া, ঝিনাইদহ।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ