আইন শৃংখলা রক্ষায় কঠোর অবস্থানে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ

প্রকাশিত: ৭:০৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৬, ২০২০

আইন শৃংখলা রক্ষায় কঠোর অবস্থানে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ

বিশেষ প্রতিনিধি, কালীগঞ্জ॥
আইন শৃংখলা পরিস্থিতি রক্ষায় কঠোর অবস্থানে রয়েছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থানা পুলিশ। সম্প্রতি কালীগঞ্জে ধর্ষণ, হত্যা, চুরি ও ডাকাতির যে ঘটনাগুলি ঘটেছে সেগুলি কঠোর হস্তে দমন করা হয়েছে। পুলিশের দাবি যে ঘটনাগুলি ঘটেছে সেগুলি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এসব ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে এবং পুলিশ সবগুলি ঘটনার আসামি গ্রেপ্তার ও মালামাল উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন।


কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজুর রহমান জানান, গত ৯ জুন রাতে কালীগঞ্জ শহরের মেইনবাস স্টান্ডের শিপন কম্পিউটার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চুরি হয়। চোরেরা প্রতিষ্ঠানের তালা ভেঙ্গে নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন চুরি করে নিয়ে । এ ঘটনায় থানায় মামলা হওয়ার ১০ দিনের মধ্যে পুলিশ প্রকৃত আসামি জনি ম-ল ও তার মা কে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় চুরি হওয়া ৫টি মোবাইল ফোন ও নগদ ৭৪ হাজার টাকা।


গত ১৪ জুলাই পৌর শহরের নিশ্চিন্তপুরে এআর ট্রেডার্সের ইউনিলিভার ডিপোতে চুরির সাথে জড়িত আসামিদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার ৫ দিন পর চুরি সাথে জড়িত ২০ আগস্ট যশোর জেলার বজ্রাপুর এলাকার থেকে মৃত তহিদুল ইসলামের ছেলে সাদ্দাম হোসেন (৩০), ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার শাহাবাজপুর এলাকার অহিদুল ইসলামের ছেলে আরিফ হোসেন তুষার (২০) ও যশোর সদরের বেজপাড়া এলাকার এজেমবারের মেয়ে নুরজাহান আক্তার রতœা (২০) গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছে থেকে চুরি হওয়া ট্যাবগুলিও পুলিশ উদ্ধার করে।
এছাড়া গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় উপজেলার ত্রিলোচনপুর গ্রামের সামাউল ম-লের মেয়ে কেয়া খাতুন (১৬)। নিখোঁজের ১৭ দিন পর গত ১৩ মার্চ দাদাপুর গ্রামের একটি কলাবাগান থেকে কেয়ার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুরিশ। তার পরিহিত পোশাক ও সেন্ডেল দেখে কেয়ার লাশ বলে সনাক্ত করে তার পিতা। এ ঘটনায় কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয়।


ক্লুলেস এ মামলাটির তদন্ত করেন কালীগঞ্জ থানার এসআই কাজী আবুল খায়ের। করোনার মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করতে প্রযুুক্তিগত সহায়ত, বিশ্বস্ত গুপ্তর নিয়োগ ও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ছদ্মবেশ ধারন করে মামলার তদন্তকারী কর্মকতা চুয়াডাঙ্গার জেলার জীবননগর, ঢাকা ও কালীগঞ্জ থেকে মামলার প্রকৃত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেন। গত ১৬ মার্চ চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগন উপজেলার হাসাদাহ এলাকা থেকে মিলন নামের একজনকে আটক করা হয়। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে মিলন হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। পরে সে আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী প্রদান করে এবং তার সাথে ইসরাফিল ও আজিম জড়িত এমন তথ্য প্রদান করে। মিলন গ্রেফতার হওয়ার পর আসামী ইসরাফিল ও আজিম গা ঢাকা দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করতে থাকে। পরে ই¯্রাফিলকে ঢাকা থেকে এবং আজিম কে কালীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারাও হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করে। গ্রেপ্তারকৃত তিন আসামির বাড়ি ত্রিলোচনপুর গ্রামে।
অপরদিকে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার পূর্ববালিয়াডাঙ্গা গ্রামের লিবিয়া প্রবাসীর স্ত্রী তিন সন্তানের জননীকে গত ৩০ জুন ৫ জন মিলে সংবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে।

এ ঘটনায় ওই নারী নিজেই বাদি হয়ে গত ১০ জুলাই সন্ধ্যায় আল আমিন (২২), ইউনুচ আলী (৩০), আবু সাঈদ (২৫), আলী হোসেন (২৪) ও জুয়েলসহ ৫ জনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইন ৯ (৩) এবং পর্ণোগ্রামী নিয়ন্ত্রণ আইন ৮ (১)/৮(২) ধারায় কালীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ সব আসামিকে গ্রেপ্তার করে। আসামিরা আদালতে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে।
এছাড় গত ১৫ আগস্ট ১২ বছরের মেয়েকে যৌন হয়রানীর অভিযোগে পিতার বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা হয়। ভিকটিমের মা বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। ওই মামলা দায়ের পর পরই পুলিশ অভিযুক্ত বাবা নাড়ু গোলাপকে গ্রেপ্তার করে।ওসি মাহফুজুর রহমান আরো জানান, অপরাধ করে কেউ রেহায় পাবে না। পুলিশ অপরাধ দমনে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। তিনি দাবি করেন কালীগঞ্জ শহরে মাদকের যে ভয়াবহতা ছিল আজ তা নেই। মাদক ব্যবসায়ী ও বিক্রির সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনে সোপর্দ করা হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে উদ্ধার করা হয়েছে মাদকদ্রব্য। তিনি আইন শৃংখলা রক্ষায় পুলিশের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন।