ঢাকা ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
প্রকাশিত: ৩:৩৫ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৮, ২০১৭
কী শহর, কী গ্রাম; কোথাও ভালো নেই সাধারণ মানুষ। সবারই যেন নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। তবে শহরের তুলনায় গ্রামের মানুষ বেশি কষ্টে আছেন। গ্রামের মানুষের এ কষ্টের বিষয়টি ফুটে উঠেছে খোদ সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০১৬ সালের খানা আয়-ব্যয় জরিপে।
বিবিএস’র সর্বশেষ এই জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে মঙ্গলবার। এতে ৪৬ হাজার খানার মতামত নেয়া হয়। এর আগে ২০১০ সালের খানা আয়-ব্যয় জরিপে মতামত নেয়া হয়েছিল ১২ হাজার খানার।
ছয় বছরের ব্যবধানে ২০১৬ সালে গ্রামাঞ্চলে খানাপ্রতি আয় বেড়েছে এক হাজার ৮৭৪ টাকা। আয় বৃদ্ধির এ হার ১৬ দশমকি ৩২ শতাংশ। অপরদিকে খানাপ্রতি ব্যয় বেড়েছে চার হাজার ৫৪৪ টাকা। ব্যয় বৃদ্ধির এ হার ৪৭ দশমকি ২৭ শতাংশ।
বিবিএস প্রতি পাঁচ বছর পরপর খানা আয়-ব্যয় জরিপ করে থাকে। তবে সর্বশেষ জরিপটি করা হয়েছে ছয় বছর পর। ২০১৬ সালের এ জরিপ অনুযায়ী গ্রামাঞ্চলে খানাপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৩৫৩ টাকা। এর বিপরীতে খানাপ্রতি ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ১৫৬ টাকা। অর্থাৎ গ্রামাঞ্চলে খানাপ্রতি যে আয় হচ্ছে ব্যয় তার থেকে ৮০৩ টাকা বেশি।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ছয় বছরের ব্যবধানে ২০১৬ সালে গ্রামাঞ্চলে খানাপ্রতি আয় বেড়েছে এক হাজার ৮৭৪ টাকা। আয় বৃদ্ধির এ হার ১৬ দশমকি ৩২ শতাংশ। অপরদিকে খানাপ্রতি ব্যয় বেড়েছে চার হাজার ৫৪৪ টাকা। ব্যয় বৃদ্ধির এ হার ৪৭ দশমকি ২৭ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, গ্রামাঞ্চলের আয়-ব্যয়ের যে পার্থক্য দেখা যাচ্ছে তাতে স্পষ্ট গ্রামের মানুষ ঋণ করছে। এই ঋণের অর্থ কোথায় ব্যয় হচ্ছে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। যদি বিনিয়োগে অর্থ ব্যয় হয় তবে সেটা ভালো লক্ষণ। যদি এই অর্থ ভোগের পেছনেই যায় তাহলে সেটা কিছুতেই ভালো লক্ষণ না।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, আয়ের থেকে ব্যয় বেশি হওয়ায় এটি স্পষ্ট যে গ্রামাঞ্চলের মানুষ ঋণ করছে। এ ঋণ হতে পারে আত্মীয়স্বজন বা এনজিও থেকে। যদি তারা এ ঋণের টাকা বিনয়োগে ব্যয় করে তাহলে এটি তাদের জন্য ভালো। কারণ এটি থেকে ভবিষ্যতে তাদের বেনিফিট পাওয়ার সম্ভাব রয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, যে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে তা দারিদ্র্যবান্ধব না। এ জন্য শহর ও গ্রাম সব জায়গায় মানুষের আয়বৈষ্যম বাড়ছে। এর সঙ্গে কর্মসংস্থান বাড়ছে না। তাই জরিপ অনুসারে দেখা যাচ্ছে, গ্রামের মানুষের আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি। শহরের মানুষের আয় কিছুটা বাড়লেও ব্যয় তার কাছাকাছি। আয় ও ব্যয় সমান সমান হলে কিংবা আয়ের থেকে ব্যয় বেশি হলে মানুষ কীভাবে ভালো থাকে?
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গ্রামাঞ্চলের অনেকেই বিভিন্ন ঋণ প্রোগ্রামের সঙ্গে জড়িত। সে কারণে হয়তো আয়-ব্যয়ের পার্থক্য হতে পারে। তবে গ্রামাঞ্চলে প্রকৃত সঞ্চয় হচ্ছে না। সঞ্চয়ের এ নেতিবাচক প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে গ্রামাঞ্চলের মানুষকে আয়বর্ধক কাজে জড়িত করতে হবে।
তিনি বলেন, এটি হলো গড় হিসাব। এই হিসাবের মধ্যে অনেকেই আছেন যাদের আয়ের থেকে ব্যয় বেশি। যাই হোক এখন গ্রামাঞ্চলের মানুষকে আয়বর্ধক কাজে জড়িত করে তাদের মধ্যে সঞ্চয়ের মানসিকতা তৈরি করতে হবে।
এদিকে বিবিএস’র প্রতিবেদনে দেখা গেছে, শহরাঞ্চলে ২০১৬ সালের জরিপে খানাপ্রতি মাসিক আয় দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার ৫৬৫ টাকা। এর বিপরীতে ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৬৯৭ টাকা। ২০১০ সালে শহরাঞ্চলে খানাপ্রতি মাসিক আয় ছিল ১৬ হাজার ৪৭৫ টাকা এবং ব্যয় ছিল ১৫ হাজর ৫৩১ টাকা।
২০১৬ সালের জরিপে জাতীয় পর্যায়ে (গ্রাম-শহর মিলিয়ে) খানাপ্রতি মাসিক আয় দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৯৪৫ টাকা। এর বিপরীতে ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৯১৫ টাকা। ২০১০ সালে জাতীয় পর্যায়ে খানাপ্রতি মাসিক আয় ছিল ১১ হাজার ৩৫৩ টাকা এবং ব্যয় ছিল ১১ হাজর ২০০ টাকা।
সম্পাদক – মাহমুদ হাসান টিপু
নির্বাহী সম্পাদক – পিন্টু লাল দত্ত
বার্তা সম্পাদক – সোহাগ আলী
www.jhenaidahsongbad.com
jhenaidahsongbad@gmail.com
প্রকাশক- জাহিদুল ইসলাম বাবু মিয়া
ব্যবস্থাপনা পরিচালক – মোঃ মজিবুর রহমান সরকার
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সড়ক,ঝিনাইদহ
০১৭১১২৬০৩৯৩ / ০১৭১১৪৫২০৫১
Design and developed by zahidit.com