কালীগঞ্জে স্কুলের মাঠে পশুর হাট : ইজারাদার সভাপতি

প্রকাশিত: ৩:১৪ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৮, ২০১৭

কালীগঞ্জে স্কুলের মাঠে পশুর হাট : ইজারাদার সভাপতি

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার গাজীর হাট মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে ৫০ বছর ধরে গরু-ছাগলের হাট বসানো হচ্ছে। প্রতি সোমবার গরুর হাট বসায় ওইদিন অর্ধদিবস স্কুলে পাঠদান করনো হয়। মাঠের বেহাল দশার কারণে জাতীয় সঙ্গীত ও সমাবেশ করা হয় না। খেলাধুলাও করতে পারে না স্কুলের শিক্ষার্থীরা। সোমবার দুপুরে স্কুল মাঠে গিয়ে দেখা যায়, অনেক ব্যবসায়ী গরু-ছাগল নিয়ে মাঠের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে। শিক্ষার্থীরা শ্রেণীকক্ষে বসে আছে। চারদিকে গবাদিপশুর মলমূত্রের গন্ধ। মাঠের মধ্যে বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করায় মাঠ কাদায় পূর্ণ। শিক্ষার্থীরা মাঠ দিয়ে হাঁটতেও পারে না। বছরের কোনো সময়ই শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করতে পারে না। সপ্তাহে প্রতি সোমবার ৮টা ক্লাসের মধ্যে চারটা ক্লাস করানো হয়।

 

গরুর হাটে চিৎকার-চেঁচামেচির কারণে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায়ও মনোনিবেশ করতে পারে না। ১৯৬১ সালে এক একর পাঁচ শতক জমির উপর গড়ে ওঠে বিদ্যালয়টি। বর্তমানে বিদ্যালয়ে ১৬ জন শিক্ষক, তিনজন কর্মচারী ও একজন লাইব্রেরিয়ান রয়েছেন। শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৭০০ জন।

 

স্থানীয়রা জানায়, প্রায় ৫০ বছর ধরে এ মাঠে গরুর হাট বসছে। প্রতি বছর বিদ্যালয়কে ৩০ হাজার টাকা দেয় হাট ইজারাদার। শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করে এ হাট বসানো হয়। হাট বসায় মাঠ দিয়ে ভালোভাবে হাঁটাও যায় না। এ বিদ্যালয়ের সভাপতিই এ হাটের ইজারাদার। সরকার প্রতি বছর এ হাট থেকে ২৫-৩০ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করে। এ বছরে ২৯ লাখ টাকা দিয়ে ইজারা নিয়েছেন সাগর বিশ্বাস। অন্য কোনো স্থানে এ হাট সরিয়ে নিলে বিদ্যালয়ের পরিবেশ ভালো হবে ও শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করতে পারবে।

 

কয়েকজন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গরু-ছাগলের হাটের কারণে বিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীরা মাঠে খেলাধুলা বা হাঁটতেও পারে না। কিন্তু কেউ এর প্রতিবাদ করতে পারে না। কারণ বিদ্যালয়ের সভাপতি এ হাটের ইজারা নিয়েছেন। বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর এক ছাত্র জানান, প্রতি সোমবার চার ক্লাস পর ছুটি দেয়া হয়। মাঠে দুর্গন্ধের ফলে শ্রেণীকক্ষে বসা যায় না। আমরা একটু খেলতে পারি না।

 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জালাল উদ্দিন জানান, বহু বছর ধরে হাটটি বসছে। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার সময় ফান্ডে কোনো টাকা না থাকায় হাটটি বসায় স্থানীয়রা। এ হাট থেকে প্রতি বছরই কিছু টাকা ফান্ডে জমা হয়। মাঠের বেহাল দশার কারণে বিদ্যালয়ে জাতীয় সঙ্গীত ও সমাবেশ করা হয় না বলেও জানান তিনি। কালীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শেখ মো. কামরুজ্জামান বলেন, বিষয়টি আমি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ