ঝিনাইদহ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মসিউর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন সম্পন্ন হয়েছে।

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সিরাজুল ইসলাম ও আসামি পক্ষের আইনজীবী শরিফুল ইসলাম যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।

সোমবার যশোরের স্পেশাল জজ আদালতে দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। এরপর আগামী ২৫ অক্টোবর রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত।

দুদকের আইনে তথ্য গোপনের অপরাধে ৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও জরিমানা এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অপরাধে সর্বোচ্চ ১০ বছর সাজা ও জরিমানার বিধান রয়েছে। সেই হিসেবে দুদক আসামির সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বলে জানান পিপি সিরাজুল ইসলাম।

মামলার নথিসূত্রে জানা যায়, জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন প্রায় ১০ কোটি ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৩৩০ টাকার সম্পদ অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগে ২০০৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় কুষ্টিয়ার তৎকালীন সহকারী পরিচালক মোশারফ হোসেন মৃধা মামলা দায়ের করেন।

২০০৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মামলাটি তদন্ত শেষে মো. মসিউর রহমানকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা ও দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের (যশোর) উপপরিচালক মো. নাসির উদ্দিন।

২০০৯ সালের শেষের দিকে ঝিনাইদহ সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত মামলাটি আমলে নেন। আমলযোগ্য মামলাটির বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে প্রসিডিং কোয়াসমেন্টের জন্য আবেদন করেন মো. মসিউর রহমান।

এরপর ২০১০ সালের ৬ জুন উচ্চ আদালত মামলাটির পরবর্তী কার্যক্রম স্থগিত করেন।

চার বছর পর ২০১৪ সালের ১৭ এপ্রিল উচ্চ আদালত আসামির মোকাদ্দমা খারিজ করে স্থগিতাদেশ বাতিল করেন। একইসঙ্গে স্পেশাল জজ আদালত যশোরকে মামলার কার্যক্রম আইনানুযায়ী পরিচালনার নির্দেশ দেন।

এরপর আসামি পক্ষের বিভিন্ন সময়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু হয়। অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টে লিভ টু আপিল দাখিল করেন আসামি। পরবর্তীতে লিভ টু আপিল খারিজ হয়ে গেলে পুনরায় সুপ্রিমকোর্টে রিভিউ পিটিশন দাখিল করেন। রিভিউ পিটিশন খারিজ হলে বিচারকাজ শুরু হয়। পুনরায় আয়কর আইনের বিরুদ্ধে রিট পিটিশন দাখিল করেছেন উচ্চ আদালতে। সেখানে এই মামলার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

১৬ অক্টোবর দুই পক্ষের আইনজীবীর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন হয়েছে। আদালত আগামী ২৫ অক্টোবর মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেছেন।

জানতে চাইলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) যশোরের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ১৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। সোমবার দুই পক্ষ মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। এরপর আদালত মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেছেন।